নারায়ণগঞ্জে সারোয়ার-তামিম গ্রুপের ৩ সদস্য গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও রূপগঞ্জের জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের ৩ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১ সদস্যরা। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিদেশী পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, একটি চাপাতি, একটি চাকু এবং বেশ কিছু বই ও লিফলেট।
আজ দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে অবস্থিত র‌্যাব-১১ এর ব্যাটেলিয়ন সদর দফতর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব- ১১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্ণেল কামরুল হাসান এই তথ্য জানান। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপ-অধিনায়ক মেজর আশিক বিল্লাহ ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মশিউর রহমান।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- ঢাকার কেরানীগঞ্জের আবদুর রহমান ওরফে রুবেল ওরফে সুফিয়ান (৩২), ময়মনসিংহ জেলার সদর থানার সৈয়দ রায়হানুল আহসান ওরফে নাফিস(৩২) ও চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার মোহাম্মদ ইমাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু উমামা আল বাহিরী (২৭)।
র‌্যাব- ১১ অধিনায়ক লে. কর্ণেল কামরুল হাসান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোনারগাঁয়ে একটি জঙ্গি সংগঠনের বেশকিছু সদস্য নাশকতার জন্য পরিকল্পার জন্য গোপন বৈঠকের জন্য মিলিত হয়েছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বন্দর ও রূপগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সদস্যরা স্বীকার করে যে, তারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি’র (সারোয়ার-তামীম গ্রুপের) সক্রিয় সদস্য এবং তারা সাংগঠনিক কর্মকান্ডের সমন্বয় ও নাশকতার পরিকল্পনার জন্য গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিল।
সিও জানায়, গ্রেফতারকৃত আবদুর রহমান ওরফে রুবেল ওরফে সুফিয়ান ২০০২ সালে তানজিম আল ইসলাম নামক মৌলবাদী সংগঠনের মাধ্যমে জিহাদের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং ২০০৪ সালে তার পিতার ঘনিষ্ট বন্ধু জনৈক দাউদের মাধ্যমে হানাফি মতাদর্শ থেকে সালাফি মতাদর্শে মত্যন্তরিত হয়। ২০০৬ সালে জনৈক এক ‘স্যার’ এর মাধ্যমে সে জেএমবিতে যোগদান করে দাওয়াতি কাজ করতে থাকে। সে জসিম উদ্দিন রাহমানির জঙ্গি সংক্রান্ত কর্মকান্ডের একান্ত সহকারী হিসেবে প্রায় চার বছর কাজ করেছে এবং জসিম উদ্দিন রাহমানি গ্রেফতার হওয়ার পর সে মাওলানা আব্দুল হাকিকের সহকারী হিসেবে এক বছর কাজ করেছে। মূলত মাওলানা আব্দুল হাকিম গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ইমরান আহমেদের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করে আসছিল। আবদুর রহমান ২০০৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় এগার বছর মূল জেএমবির সদস্য হয়ে কাজ করে জেএমবির সদস্য সদস্য সংগ্রহ করেছে। পরবর্তীতে সে ২০১৬ সালে তার গুরু কথিত ‘স্যার’ এর মাধ্যমে জেএমবির (সারোয়ার-তামীম) গ্রুপে যোগদান করে দাওয়াতী শাখা থেকে সামরিক শাখায় আত্মপ্রকাশ করে। আবদুর রহমান ইতোপূর্বে র‌্যাব-১১ কর্তৃক গ্রেফতারকৃত শুরা সদস্য ইমরান আহমেদের জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করার কাজ হাতে নিয়েছিল।
সিও আরও জানান, গ্রেফতারকৃত সৈয়দ রায়হানুল আহসান@ নাফিস সে চাকরীর পাশাপাশি মূল জেএমবি ও পরবর্তী জেএমবির সারোয়ার তামিম গ্রুপের দাওয়াতী, আইটি ও গবেষণা শাখার একজন সক্রিয় সদস্য। ২০০৭ সালে জনৈক ‘স্যার’ এর মাধ্যমে জেএমবিতে সক্রিয় হয় এবং দাওয়াতি কাজ শুরু করে। কম্পিউটারের উপর দক্ষতার কারণে জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের অনেক সদস্যদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠাতা বৃদ্ধি পায়। ২০০৭-২০১৫ সাল পর্যন্ত সে মূল জেএমবির হয়ে ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতী ও সাংগঠনিক কাজ পরিচালনা করত। ২০১৫ সালের শেষ দিকে সে কথিত ‘স্যার’ এর মাধ্যমে জেএমবি’র (সারোয়ার-তামিম) গ্রুপে যোগদান করে।
গ্রেফতারকৃত মোহাম্মদ ইমাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু উমামা আল বাহিনী সে হুজির পক্ষে কিছুদিন দাওয়াতী কাজ করেছে। পরবর্তীতে সারোয়ার-তামিম গ্রুপে যোগদান করে এবং জঙ্গি হামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন কলাকৌশল ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে সদস্যদের মাঝে প্রচারের কাজ করত।
গ্রেফতারকৃত আবদুর রহমান ও মোহাম্মদ ইমাম হোসেনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় দু’টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও গ্রেফতাকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও র‌্যাব জানায়।

Check Also

বিদেশে নয় দেশের মাটিতেই বিয়ের পরিকল্পনা রকুল-জ্যাকির

সংবাদবিডি ডেস্ক ঃ রকুল প্রীত সিং ও জ্যাকি ভাগনানির বিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি। বিয়ের প্রস্তুতি এখন …