ঢাকা: রেমিটেন্স প্রবাহে কয়েক মাসের মন্দাবস্থা চলার পর চলতি মে মাসের প্রথম ১৯ দিনে প্রবাসীদের ৮০৭ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলার পাঠানোর মধ্য দিয়ে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহে পুনরায় চাঙ্গাবস্থা ফিরে এসেছে। গতমাসের একই সময়ের তুলনায় এ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১১৫ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন ডলার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত মাসের (এপ্রিল) ১ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত দেশে রেমিটেন্স এসেছে ৬৯২ মিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান মুখপাত্র সুভঙ্কর শাহ বলেন, ‘সাম্প্রতিক প্রবাহ ক্রমান্বয়ে রেমিটেন্স বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং এই প্রবণতা সামনের মাসগুলোতে বজায় থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। ’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে ১০০৯ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ৯৪০ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু প্রবাসী শ্রমিক মার্চ মাসে ১০৭৭ দশমিক ৫২ মিলিয়ন ডলার এবং এপ্রিল মাসে ১০৯২ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার পাঠানোর রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
সরকার, বিবি ও মোবাইল ব্যাংকিং অপারেটরদের কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির এই প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সুভঙ্কর শাহ বলেন, ‘রেমিটেন্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসাটা একটা ভাল লক্ষণ। ’
তিনি বলেন, ‘কতিপয় অনাবাসিক বাংলাদেশী (এনআরবি) তাদের টাকা দেশে পাঠানোর জন্য মোবাইল ব্যাংকিংসহ কিছু অবৈধ পন্থা অবলম্বন করেন। ’
তিনি আরো বলেন, এছাড়া ডলারের বিপরীতে মুদ্রার মান হ্রাস এবং তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোর আয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানেই অধিকাংশ বাংলাদেশী অভিবাসী কাজ করেন।
সুভঙ্কর শাহ আরো বলেন, অবৈধ পথে অভিবাসী শ্রমিকদের টাকা পাঠানো বন্ধে বিকাশ অথবা রকেটের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলাকে চিঠি দিয়েছে।
সূত্র জানায়, দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি তদন্ত টিম মার্চ মাসে সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সফর করেছে।
এ সময় তদন্ত দল দেখেছে অনাবাসিদের দেশে টাকা পাঠাতে অবৈধ পথ বেছে নেয়ার অনেক কারণ রয়েছে এর অন্যতম হচ্ছে- সহজ ব্যবস্থাপনা ও ব্যবস্থাপনা খরচ না লাগা।
সূত্র অনুযায়ী দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ হ্রাসের ক্ষেত্রে এককভাবে শতকরা ৫০ ভাগ দায়ী মনে করা হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতি। তাছাড়া অবৈধ শ্রমিকরা বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠাতে চান না।
সুভঙ্কর শাহ জানান, দেশের অর্থনীতিকে আরো চাঙ্গা করতে সরকার রেমিটেন্স পাঠানোর পদ্ধতি সহজ করতে এটা পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।