ঢাকা: গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়ছে সারাদেশ। প্রখর রৌদ ও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরম কিছুতে কমছে না। ফলে নাজুক হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। দিনে যেমন রোদের প্রতাপ, রাতে তেমন গরম হাওয়া। গেল কয়েকদিন ধরে অফিসগামী মানুষ, শ্রমিক, স্কুলগামী শিক্ষার্থী এবং অল্প বয়সের শিশুরা গরম ও তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। আবহাওয়ার রূপ বদলে গিয়ে খরতাপে যেন পুড়িয়ে মারছে মাঠ-ঘাট-জনপদ। এক-একটা করে দিন এগোচ্ছে, সাথে বেড়েই চলেছে তাপমাত্রার পারদ। সেইসঙ্গে বাতাসে বাড়ছে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণও। গরমে একেবারে হাঁসফাঁস অবস্থা। খরতাপ ঠেকাতে চেষ্টারও কমতি নেই মানুষের মাঝে। এদিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গরমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ ও পানির সঙ্কট। বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। তাপ এড়িয়ে চলাফেরার পরামর্শ চিকিৎসকদের। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দিনে ও রাতে এমন তাপদাহ আরও ৫ দিন থাকবে। তবে আসছে ৪৮ ঘণ্টায় কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। তবে বেশি তাপদাহ থাকবে রাজধানী ও খুলনা বিভাগে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের আগাম তথ্য অনুযায়ী, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর অসহনীয় গরম ও মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ার কথা। পূর্বাভাসের সাথে তাল মিলিয়েই গরম পড়েছে বৈশাখের মাঝামাঝি থেকে।
আজ সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, চাঁদপুর, মাইজদীকোর্ট ও বরিশাল অঞ্চলসহ ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।ফলে রাজধানীসহ সারাদেশে বাড়ছে পানিশূন্যতা, জ্বর, হিটস্ট্রোক, পেট ও ত্বকের অসুখ। চিকিৎসকরা অতিরিক্ত পানি পান ও রোদ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। গরমের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ। দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে স্বস্তি পাচ্ছে না নগরবাসী। সবচেয়ে কষ্টে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমিক জনগোষ্ঠী আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে নিয়মিত রোগের প্রকোপসহ বেশ কিছু নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে বলে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ায় নতুন রোগের উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং অতিরিক্ত রৌদে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়। ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে বহমান তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮০ শতাংশ। আবহাওয়া চিত্রের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে যা উত্তর বঙ্গোপসাগরে বিস্তৃত রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।