কে হবেন আওয়ামী লীগের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক ?

সংবাদবিডি ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী বছরই তারা কাউন্সিল অধিবেশন করবে। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলোর মতে, আওয়ামী লীগ চেষ্টা করছে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে কাউন্সিল শেষ করতে, যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে আগামী বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই এই কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৩ সালের নির্বাচনকে মাথায় রেখে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের সময়সূচী এগিয়ে নিয়েছে। ইতিমধ্যে কাউন্সিলের জন্য আওয়ামী লীগ তার প্রস্তুতিও শুরু করেছে। বিভিন্ন জেলাগুলোতে অনিষ্পন্ন কমিটি গঠন চূড়ান্ত করার কাজ এখন এগিয়ে চলছে, জেলায় জেলায় সম্মেলন হচ্ছে এবং নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এসব কমিটি গঠন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি হিসেবে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ আগামী বছর শুরু থেকেই দলের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন অনুষ্ঠান করে ফেলতে চায় বলেও জানা গেছে। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল মানে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে উত্তেজনা। কারণ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সবচেয়ে জনপ্রিয়তম ব্যক্তি। দলের ১ জন নেতাকর্মীও শেখ হাসিনার সভাপতি পদ নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলবে না। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে, শেখ হাসিনা যতদিন থাকবে ততদিনই তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। আর আওয়ামী লীগ নেতারা এটাও মনে করেন যে, শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। আর এর প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদকের পদটি সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের টানা দুইবার কাউন্সিলের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। কাজেই এবার যে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন না এটি মোটামুটি নিশ্চিত। আর এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে নানামুখী আলোচনা। কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এরকম আলোচনায় অনেকগুলো নাম নিয়েই কথাবার্তা হচ্ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। যাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে সেরকম কয়েকজনের মধ্যে রয়েছে:
জাহাঙ্গীর কবির নানক: এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য সবচেয়ে আলোচিত নাম জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দল এবং সরকারকে আলাদা করার যে কৌশল গ্রহণ করেছেন, সেই কৌশলের আলোকে জাহাঙ্গীর কবির নানকই সবার থেকে এগিয়ে আছেন। কারণ তিনি সংসদ সদস্য নন, দলের ত্যাগী-পরীক্ষিত একজন নেতা। তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন, ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন, যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন, এখন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। কাজেই, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতাকর্মীদের মধ্যে তার নামই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক: ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগের সেই ভাগ্যবান নেতাদের একজন যিনি একাধারে প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। আর দলের বাইরেও তার একটা আলাদা ইমেজ এবং সুনাম রয়েছে। তিনি একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু দলের তৃণমূলের সঙ্গে তার যোগাযোগ খুব একটা নেই। রাজনীতিতে এসেছেন অনেক দেরিতে, আগে ছিলেন প্রকৃচির নেতা। এ সমস্ত বিবেচনা থেকে একজন গহণযোগ্য রাজনীতিবিদ হওয়ার পরও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে তিনি কিছুটা পিছিয়ে বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
মাহবুবউল আলম হানিফ: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাহবুবউল আলম হানিফের নামও আলোচনায় আছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর রাজনৈতিক পরিপক্বতা সবার নজর কেড়েছে। বিশেষ করে কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তিনি অনেকটা ইতিবাচক বলে দলের নেতাকর্মীরা মনে করেন। এজন্য অনেকেই ধারণা যে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে মাহবুবউল আলম হানিফ আসলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ড. হাছান মাহমুদ: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তিনি দলের অন্যতম মুখপাত্রও বটে। আওয়ামী লীগ সভাপতির ঘনিষ্ঠ হিসেবে তার রাজনীতিতে উত্থান হয়েছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এবং সাংগঠনিক বিষয়ে তিনি এখন ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন। এজন্য ড. হাছান মাহমুদ যদি শেষ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক হন তাহলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবাক হবেন না বলে জানিয়েছেন।
ডা. দীপু মনি: ডা. দীপু মনিও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং শিক্ষামন্ত্রী। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তেমন প্রভাবশালী না হলেও শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। এ কারণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার নামও নেতাকর্মীদের মুখে রয়েছে।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বাহাউদ্দিন নাছিম কর্মীদের অত্যন্ত পছন্দের একটি নাম। বাহাউদ্দিন নাছিম কর্মীবান্ধব। কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে, যেকোনো কর্মী তাদের যেকোনো সমস্যা সরাসরি বাহাউদ্দিন নাছিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। আর এসব কারণেই দলের সাধারণ সম্পাদকের দৌড়ে তার নামটাও উচ্চারিত হচ্ছে। তবে অনেকেই মনে করেন যে, বাহাউদ্দিন নাছিম অপেক্ষাকৃত তরুণ। এত তরুণকে এখনই সাধারণ সম্পাদক দেওয়া হবে কিনা, এটি একটি বিবেচ্য বিষয় বলে অনেকে মনে করছেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অনেক চমক আসতে পারে বলেও নেতাকর্মীদের আড্ডায় শোনা যায়। বিশেষ করে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, মির্জা আজম সহ কয়েকজনের নাম বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবেন তা চূড়ান্ত করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
সূত্র : বাংলা ইনসাইডার

Check Also

বিদেশে নয় দেশের মাটিতেই বিয়ের পরিকল্পনা রকুল-জ্যাকির

সংবাদবিডি ডেস্ক ঃ রকুল প্রীত সিং ও জ্যাকি ভাগনানির বিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি। বিয়ের প্রস্তুতি এখন …