জন পরিবহন কার স্বার্থে , গণপরিবহনকে জনবান্ধব করুন

ওয়াহিদ মিল্টন: গণ পরিবহন বলতে গণমানুষের যানকে বোঝায় । মোদ্দা কথায় সাধারণ মানুষই গণ পরিবহনে যাতায়াত করে। রাজধানী ঢাকা শহরে গণ পরিবহনের ভোগান্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবতই আলোচনা হচ্ছে। তবে আলোচনা-সমালোচনাই সার। সমস্যা সমাধানে এযাবত এগিয়ে আসেনি কোন মহল। পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্য বন্ধ করতে সরকার বিভিন্ন সময় নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েও বেকায়দায় পড়েছে। কোনভাবেই লাগাম টেনে ধরf যাচ্ছিল না পরিবহন সেক্টরের। কোন এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় কেন জানি সব সরকারের শাসনামলেই এ সেক্টরের নিয়ন্ত্রকেরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করার প্রেক্ষিতে গত ১৬ এপ্রিল থেকে যে নৈরাজ্য শুরু হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সাধারণ যাত্রীদের সাথে সরাসরি বিবাদে লিপ্ত হচ্ছে বাসের চালক কিংবা সুপারভাইজাররা। নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া নেয়ার কথা বলা হলেই সরাসরি আক্রমন করা হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। তবে ঢাকার অধিকাংশ রুটের সিটিং সার্ভিসগুলো বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করে রেখেছে বাস মালিকেরা। আমার প্রশ্ন হচ্ছে রাস্তায় গাড়ি চলাচল করতে বিআরটিএ গাড়িগুলোকে যে রুট পারমিট দিচ্ছে তা কার স্বার্থে দিচ্ছে। সরকার তো নাগরিক সেবা শতভাগ নিশ্চিত করার জন্যই এ ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। পরিবহন মালিকেরা যখন রাস্তায় গাড়ি নামায় তখন এধরনের মুচলেকা দিয়েই তারা রুট পারমিট নিয়ে থাকে। তাহলে তাদের স্বার্থ বিরোধী কিছু হলেই জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগে ফেলে তারা তাদের গাড়ি বন্ধ করে রাখবে এটা কোন ধরনের নৈরাজ্য? সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যদিও আপ্রাণ চেষ্টা করছেন পরিবহন সেক্টরের অনিয়ম প্রতিরোধ করতে। তবে শর্ষ্যে যদি ভূত থাকে তাহলে সে ভূত তাড়াবে কে? সরকারের মধ্যেই ঘাপটি মেরে বসে আছে ভূত। তারা চায়না এ সেক্টরের নৈরাজ্য বন্ধ হোক কারণ শত কোটি টাকার খেলা রয়েছে পরিবহন সেক্টরে। সরকারের দুজন মন্ত্রী সরাসরি জড়িত পরিবহন সেক্টরের সাথে। মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইচ্ছে করলেই পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্য বন্ধ করতে পারেন না। যারা ঘর থেকে বের হয়ে নিরাপদে আবার ঘরে ফিরতে চায় সবাই ই গণপরিবহণের শৃঙ্খলা চায়। গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আসলে সাধারণ মানুষের মাঝেই সবচেয়ে বেশি স্বস্তি ফিরে আসবে। এতে করে সরকারের দায়বদ্ধতাও জনগণের কাছে উজ্বল হবে। ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহন নিয়ে নতুন করে ভাববার সময় এসেছে। উন্নত দেশগুলোর আদলে মেগা সিটি ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো এখন সময়ের দাবী। লেখক সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম মুকুল তার ফেসবুক ওয়ালে একটি প্রস্তাব রেখেছেন বর্তমান বাস্তবতায় প্রস্তাবটি বিবেচনার দাবী রাখে । তার রাখা প্রস্তাবটি এমন: ঢাকার সব গণপরিবহনকে একটি কোম্পানির আওতায় নিয়ে পরিচালনা করা হোক। আর এ কোম্পানির পরিচালনার ভার অন্তত এক বছরের জন্য দেয়া হোক সেনাবাহিনীর হাতে। সব ঠান্ডা হয়ে যাবে, নাগরিকরা শান্তিতে চলাফেরা করতে পারবে- বাস মালিকরাও কোম্পানিতে বাস খাটিয়ে মাসে মাসে মুনাফা পাবে। উন্নত অনেক শহরেই নগর কতৃপক্ষের তত্বাবধানে একটি কোম্পানির আওতাতেই বাস ও ট্রেন পরিচালনা করা হয়। আমাদের এখানে কাজটা খুব কঠিন, কারন রাজনৈতিক দলগুলোর বহু নেতা সরাসরি এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে দাঁড়াবেন। মানুষকে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করতে এর চেয়ে আর কোন ভালো সমাধান আছে বলে মনে হয়না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এমন বাস্তবভিত্তিক পরামর্শ অনেকেই দিয়েছেন কিংবা দিচ্ছেন। তবে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিসি) নিয়েও ভাববার সময় এসেছে। কিভাবে বিআরটিসির সেবাকে আরো কার্যকর করা যায় তা নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার। মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর কাছে আবেদন আপনি ভাবুন জনভোগান্তি দুর করতে কিভাবে গণপরিবহণের নৈরাজ্য দুর করা যায়। সরকার যখন জনগণের সেবকের ভূমিকায় থাকে তখন সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হয় জনগণের কথা চিন্তা করে। গণপরিবহনের নৈরাজ্য বন্ধ করে জনগণকে স্বস্তি দিন এটাই আর্জি ( লেখক : প্রধান সম্পাদক সংবাদ বিডি ডটকম)

Check Also

বিদেশে নয় দেশের মাটিতেই বিয়ের পরিকল্পনা রকুল-জ্যাকির

সংবাদবিডি ডেস্ক ঃ রকুল প্রীত সিং ও জ্যাকি ভাগনানির বিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি। বিয়ের প্রস্তুতি এখন …