আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ রাখতে আপত্তি জানিয়েছে মোদি সরকার। একবছর ধরেই পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ নাম রাখার তোড়জোড় চলছিল। কিন্তু বাংলাদেশের নামের সঙ্গে এই নতুন নামের সামঞ্জস্য থাকায় দেশটির কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নামের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক বর্তমান ও আজকাল সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলা’ নাম রাখার ক্ষেত্রে আপত্তির কারণ প্রধানত প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক। সেখানে দাঁড়িয়ে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্যের নাম ‘বাংলা’ হলে বিভ্রান্তি আসতে পারে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হতে পারে। সেই কারণেই ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ রাখার ক্ষেত্রে আপত্তির কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।
এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ রাখা হলে তা ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’ ও হিন্দিতে ‘বাঙ্গাল’ নামে উচ্চারিত হবে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র চাইছে হিন্দি ও ইংরেজি আলাদা নাম না দিয়ে রাজ্যর একটাই নাম থাকুক।
এ দুটি কারণে পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ রাখার ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নাম পুনর্বিবেচনার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য প্রশাসনিক কার্যালয় নবান্নে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের জন্য ‘বাংলা’ নাম ঠিক করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সেই নাম পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকে পাসও করে নেন। এরপর বাংলা নামটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরই পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করার ব্যাপারে উদ্যোগী হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নামবদলের কারণ হিসেবে জানা যায়, মূলত ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় প্রতিটি রাজ্যের আদ্যাক্ষর ভিত্তিতে ক্রমানুসারে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান জনপ্রতিনিধিরা।
সেখানে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের ইংরেজি নাম ওয়েস্ট বেঙ্গল হওয়ায় আদ্যাক্ষর ‘ডাব্লিউ’ হওয়ার কারণে সবশেষে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান পশ্চিম বাংলার জনপ্রতিনিধিরা। যে কারণে ইংরেজিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল নাম পরিবর্তন করে ‘বেঙ্গল’ নাম রাখতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ হলে ইংরেজিতে তা হতো ‘বেঙ্গল’। ফলে বেঙ্গলের আদ্যাক্ষর ‘বি’ হওয়ায় দ্বিতীয় স্থানেই বক্তব্য রাখার সুযোগ পেতেন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রতিনিধিরা।