মার্চ ২৫, ১৯৭১। পুরো বিশ্ব হতবাক হয়ে সাক্ষী হয়েছে পৃথিবীর অন্যতম নৃশংস ও জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের। বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাষ্ট্র ও সরকার যে অবস্থানই গ্রহণ করুক না কেন মুক্ত সাংবাদিকতা জনগণকে সঠিক খবরটি দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় নানা সংবাদ ও বিশ্লেষণমূলক লেখা।
নিউইয়র্ক টাইমসে হোমার এ জ্যাক ২৫ মার্চ নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তার শিরোনাম ছিল ‘আমের বনে কেবল লাশের গন্ধ’। তিনি তার প্রতিবেদন শুরু করেছেন এভাবে “ বহু বছর আগে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখে গেছেন, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি… ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে …। এই বসন্তে পূর্ব পাকিস্তান/বাংলাদেশের আমের বনে কেবল লাশের গন্ধ- হত্যাযজ্ঞে আজ অনেক হৃদয় দিশেহারা।”
কত মানুষ ২৫ মার্চ হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য তার প্রতিবেদনে নেই। মূলত তখন সবাই আসলে এক ধরনের ধোঁয়াশার মধ্যেই ছিল। তিনি তার প্রতিবেদনে বলেন ‘রক্ষণশীল হিসাবে মৃত মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজার। আর শরনার্থীর হিসেব ৭১ এর ১ মে পর্যন্ত ভারতে ছয় লাখ ৫০ হাজার।
পশ্চিম পাকিস্তানিদের বরাত দিয়ে তিনি লেখেন, “ পূর্বাঞ্চলে যার নিহত হয়েছে তারা ভারতের বিহার ওঃ অন্যান্য রাজয় থেকে আগত বিহারি মুসলমান।”
জ্যাক তার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের তৎকালীন মন্ত্রীপরিষদের সদস্যদের বরাতে লেখেন “ … ২৫ মার্চ যা ঘটেছে, তার পর তাঁদের দেশ কখনো পাকিস্তানের দুই অংশের এক অংশ হিসেবে পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত থাকতে পারে না”।
হোমার এ জ্যাকের প্রতিবেদনে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রশ্ন রাখেন যে এমন কোন প্রক্রিয়া কি বের করা যায় কিনা যাতে করে যে সব রাষ্ট্রের অংশ স্বায়ত্তশাসনের চেয়ে বেশি কিছু চায় তারা স্বাধীন হয়ে যেতে পারে।