পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে অস্বস্তিতে শাজাহান খান

নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

ডেস্ক রিপোর্ট :

পরিবহন ধর্মঘটের অবসান হলেও ঘটনার নেপথ্যের কারণ নিয়ে আগ্রহ কমছে না। নিজে মধ্যস্থতা করে পরিবহন শ্রমিকদের শান্ত করলেও অভিযোগ থেকে মুক্ত হতে পারছেন না নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। ধর্মঘটের নেপথ্যের নায়ক মনে করা হচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের এই কার্যকরি সভাপতিকে।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে পুরো দেশ অচল হয়ে যাওয়ার পর থেকেই শাজাহান খান ও পরিবহন সংগঠনের আরেকজন নেতা প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙার প্রতি অভিযোগ উঠে। সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের মন্ত্রী এবং উপদেষ্টারাও এ বিষয়ে নৌমন্ত্রীর ইন্ধন রয়েছে বলে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শাজাহান খানসহ সরকারের প্রভাবশালী চার মন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর বিষয়টি মীমাংসা হয়। যদিও শুরু থেকেই শাজাহান খান তার জড়িত থাকার নূন্যতম সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেন। কিন্তু তারপরও অভিযোগ তার দিকেই।

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশ অচল করে দেওয়ার মতো এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জড়িত ব্যক্তি যত শক্তিশালীই হোক তার সম্পর্কে জানতে হবে। সরকারকে বিপাকে ফেলতে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, শ্রমিক অসন্তোষকে পুঁজি করে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক মহল নাশকতা সৃষ্টি চেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জানেন আমি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হতে পারি না। আমি চাই কারা এই ঘটনার নেপথ্যের শক্তি। ধর্মঘটে সরকার বিরোধী পক্ষ শ্রমিকদের আবেগকে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। শ্রমিকরা এটা বুঝতে পেরেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে। এখন অনেকে আবার এটা নিয়েও ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। এটা দুঃখজনক।

আওয়ামী লীগের একজন সভাপতিম-লীর সদস্য বলেছেন, শ্রমিক ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে সরকারের নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের ভূমিকায় দল ও সরকারের শীর্ষপর্যায়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিক ধর্মঘট নিয়ে যে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছিল, তার জন্য সম্পূর্ণরূপেই নৌমন্ত্রীকে দায়ী করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে মধ্যমসারির কেন্দ্রীয় নেতারা।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলন ছিল আদালতের রায়ের অসম্মতিতে। এটা তাদের দীর্ঘস্থায়ী করার কোনো উপায় ছিল না। ধর্মঘট তাদের প্রত্যাহার করে সড়কে ফিরতেই হতো। এছাড়া সরকার ধর্মঘট মুহূর্তের মধ্যে শেষ করে দিতে পারত। শ্রমিক নেতা শাজাহান খান সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ায় পরিবহন ধর্মঘট সরকারকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলেছে। তিনি দায়িত্বে না থাকলে শ্রমিকরা এই ধরনের সাহস করত না।

সম্পাদকম-লীর আরেক নেতা বলেন, এই ধর্মঘট আর একদিন স্থায়ী হলে, সরকারবিরোধী রাজনৈতিক মহল শ্রমিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে নাশকতা করার সুযোগ নিত। সেটা নিশ্চিত হয়েই এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করার সম্ভাব্য সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে। তবে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছুটা ক্ষুব্ধ। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজি জাফরউল্যাহ বলেন, এই ঘটনা আরও বড় হতে পারত। পরিস্থিতি খারাপ দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েকজনকে দায়িত্ব দেন বিষয়টির সমাধানে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সরকারকে বিপদে ফেলতে কোনো গোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্চে।সূত্র: আমাদের সময়.কম

Check Also

সব জায়গায় চাঁদাবাজি ও মজুতদারি বন্ধ করতে হবে

সংবাদবিডি ডেস্ক ঃ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সব জায়গায় চাঁদাবাজি এবং মজুতদারি বন্ধ করতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন …