নির্বাচন কমিশন আগামী তিন মাসের মধ্যে নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে চাইছে। এ জন্য তাদের কর্মপদ্ধতিও ঠিক করেছেন। এরই অংশ হিসাবে তারা ঠিক করেছেন যখন যেখানে নির্বাচন হবে তখন সেই এলাকা পরিদর্শন করবেন নির্বাচন কমিশনাররা।
সেখানে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রার্থী ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথেও কথা বলবেন। কথা বলে সমস্যা শুনে সমস্যার সমাধান করবেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন এই ব্যাপারেও কাজও শুরু করেছেন। বাঘাইছড়ি পৌরসভার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন ওই এলাকা পরিদর্শন করেন। বর্তমানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার নিজ এলাকা পরিদর্শন করছেন।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন, সুনামগঞ্জ, গাইবান্ধা-৪ ও বিভিন্ন উপজেলাগুলো মার্চের মধ্যে সফর করবেন নির্বাচন কমিশনারগণ। এর বাইরে পরে যখন যেসব এলাকায় নির্বাচন হবে সেখানে তারা সফরে যাবেন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণ নির্বাচনী এলাকাগুলো পরিদর্শন করলে এতে করে তারা এলাকার পরিস্থিতিটাও বুঝতে পারবেন। পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেই ব্যাপারেও আলোচনা করবেন। এছাড়াও ভোটারদের সঙ্গে ও জনপ্রতিনিধিদের এবং যারা প্রার্থী হতে পারেন তাদের সঙ্গেও কথা বলবেন। নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অবাধ এবং সুষ্ঠু করার ব্যবস্থা করবেন।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এখন তার নিজ জেলা পটুয়াখালী সফর করছেন। সেখানে বিভিন্ন কথা বলছেন। তিনি জনগণকে ও ভোটারদের আস্থা অর্জনের জন্য চেষ্টা করছেন। বার বারই তিনি এটা বলছেন তারা কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চান তারা নিরপেক্ষ। এবং তারা কাজের মাধ্যমে জাতির কাছে আস্থা অর্জনেরও চেষ্টা করছেন। তিনি গতকাল তার ভাইয়ের বাসায় যান। সেখানেও তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, কাজের মাধ্যমে জাতির কাছে আস্থার অবস্থানে পৌঁছাতে পারবেন। আগামীতে সব নির্বাচনে ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, সেই জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান।
তিনি বলেন, আমি সিইসি হয়েছি। এতে আমার স্বজন, এলাকার মানুষ ও শুভাকাঙ্খীরা খুশি হয়ে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন, অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই ব্যাপারে পরবর্তী সময়ে দেখলাম সমালোচনা হয়েছে। এমনকি আমাকে একটি দলের লোকও বলা হয়। যা খুবই দুঃখজনক। দেখেন বাবার কবর জিয়ারত করতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। সেখানে স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরা এসেছেন। তাদের তো নিষেধ করার সুযোগ থাকে না। তারা ছবি তুলতে চাইলেও বারণ করা যায় না। আর তারা কোনো না কোনো মতের বা দলের। তার মানে এই নয় যে আমিও তাদের দলের হয়ে গেলাম।
তিনি আরও বলেছেন, কোনো দলের নাম নিয়ে কথা বলতে চাই না। কাজের মাধ্যমে জাতির কাছে আস্থার অবস্থানে পৌঁছে যেতে পারব। এটা আমি বিশ্বাস করি। নিরপেক্ষ কাজের মাধ্যমেই সব দলের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হব। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে। নির্বাচন প্রতিদ্বন্ধীতাপূর্ণ হবে। কোনো নির্বাচনেই অনিয়মের কোনো প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, ভোটাররা যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোট প্রদান যাতে নির্বিঘœ হয় সেটাও নিশ্চিত করা হবে।
সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের চারজন কমিশনারের ব্যাপারে বিএনপির এখনও পর্যন্ত তেমন আপত্তি নেই। তারা সিইসিকে নিদর্লীয় ও যোগ্য মনে করছেন না। আওয়ামী লীগের লোক বলেও মনে করছেন। এখানে বিএনপির কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আস্থার সংকট রয়েছে। বিএনপি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কোন কথায় আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তারা মনে করছেন যেকোন ভাবেই হোক এবং যতই বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের কথা সিইসি বলুক না কেন. তিনি তার কাজটাই করবেন। এবং তাদের যে লক্ষ্য নিয়ে সরকার প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে বসিয়েছেন তিনি সেটাই করার চেষ্টা করবেন। কিন্তু বিএনপি তা হতে দিবে না।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশনার মুখে যতই সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেন না কেন এবং তিনি নিদর্লীয় লোক বলে দাবি করেন না কেন এবং যতই তিনি কাজের মাধ্যমে ভোটারদের আস্থা অর্জনের কথা বলেন না কেন সেটা তিনি করতে পারবেন না। কারণ তিনি যুগ্ম সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করেছেন। তারতো অতিরিক্ত সচিব ও সচিব হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। সেখানে তিনি কী কাজ করবেন সেটাই আমরা বুঝতে পারছি না। একটি নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন সেটা তিনি পারবেন না। এই কারণে আমরা আস্থা রাখতে পারছি না। তাছাড়া তিনি দলীয়। নিদর্লীয় নন।
Check Also
বিদেশে নয় দেশের মাটিতেই বিয়ের পরিকল্পনা রকুল-জ্যাকির
সংবাদবিডি ডেস্ক ঃ রকুল প্রীত সিং ও জ্যাকি ভাগনানির বিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি। বিয়ের প্রস্তুতি এখন …